Tuesday, 14 February 2012

বাস্তবিক কল্পনা


  কিছুদিন থেকেই একটা থম্‌থমে পরিবেশ বিরাজ করছে প্রতিষ্ঠানটিতে।তাই,আজ এমডি স্যারের রুমে সভা বসেছে।ব্রেইন(এমডি) হলেন সভাপতি।শুরু হল সভাঃ
  ব্রেইনঃকিছুদিন থেকেই আপনাদের মধ্যে কাজে অবহেলার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।এটার কারণ এবং সমাধানের উপায় খুঁজতেই আজকের সভা।প্রথমেই মিস্টার স্টোমাক,আপনেই শুরু করুন।
  স্টোমাকঃধন্যবাদ মাননীয় এমডি।আপনি আমার উপর যে দায়িত্ব দিয়েছিলেন,সেগুলো আমি যথার্থভাবে পালন করছি।কিন্তু কিছুদিন থেকে আমার স্টকে কাঁচামালের(খাদ্য) ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।তাই,আমার স্বাভাবিক কাজে একটু প্রব্লেম হচ্ছে।এই ব্যাপারে আমি মিস্টার মাঊথের দৃষ্টি আকর্ষন করেছিলাম।কিন্তু তিনি সমাধান দেন্‌নি।
  মাঊথঃএভাবে কথা বলছেন কেন মিস্টার স্টোমাক?আমি তো আপনাকে আমার সীমাবদ্ধতার কথা বলেছি।মিস্টার ব্রেইন,মিসেস হ্যান্ড কিছুদিন থেকে অফিসে আসছেন না।এর ফলে আমি যথেষ্ঠ পরিমাণ কাঁচামাল সাপ্লাই দিতে পারছিনা।এক্ষেত্রে মিস্টার হ্যান্ড(চামচের সাহায্যে) কিছুটা সাহায্য করছেন ঠিক।কিন্তু পুরোপুরি পারছেন না।
  ব্রেইনঃমিস্টার ব্রেইন,আপনার মিসেস আসছেন না কেন?
  মিস্টার হ্যান্ডঃউনি আর অফিসে আসবেন না।
  ব্রেইনঃকিন্তু কেন?
  মিস্টার হ্যান্ডঃমিস্টার নার্ভ উনাকে অপমানজনক কথা বলেছেন।তাছাড়া কাজের সময় ঠিকভাবে হেল্প করতেন না তাঁকে।
  ব্রেইনঃঘটনা সত্যি,মিস্টার নার্ভ?
  নার্ভ চুপচাপ।
  ব্রেইনঃআপনার নিরবতা-ই প্রমাণ করছে,আপনি দোষী।আপনাকে এটার জন্যে শাস্তি ভোগ করতে হবে।
  নার্ভঃআমাকে শাস্তি দিলে আসল দোষীরও শাস্তি পাওয়া উচিত।মিস্‌ হার্ট আপার সাথে মিসেস হ্যান্ডের একটু মন কষাকষি চলছিল।তাই,মিস্‌ হার্ট আপা ব্লাড সাপ্লাই এ সমস্যা করছিলেন।আমি আপনাকে এটা জানাতে চায়ছিলাম।কিন্তু হার্ট আপা আমাকে চাকরি খোয়ানোর ভয় দেখিয়ে চুপ রাখেন।
  ব্রেইনঃসত্যি,মিস্‌ হার্ট?তাহলে তো আপনাকে শাস্তি পেতে হবে।
  মিস্‌ হার্টঃআমাকে শাস্তি দিলে আমি এই অফিস ছেড়ে চলে যাবো।
  লিভারঃছিঃ মিস্‌ হার্ট।আপনার কথাতো পুরোপুরি কিডন্যাপারদের মত হয়ে যাচ্ছে।
  মিস্‌ হার্টঃএই,নিজের গায়ের রঙ আয়নায় দেখেছ একবার?কথাবার্তা ভেবে বলবে।
  স্টোমাকঃখামোখা লিভারকে ধমকাবেন না,মিস্‌।সারাদিন রুপচর্চা করতে করতে তো আপনারতো আবার অফিসের কাজের কথা মনে ই থাকে না।
  মিস্‌ হার্টঃএই মটু চুপ কর।
  নার্ভঃল্যাঙ্গুয়েজ ঠিক করুন মিস্‌।আর স্টোমাকের সাথে আমিও একমত।
  ব্রেইনঃআপনারা দয়া করে থামুন।সমস্যা সবার ই থাকে।আপনারা আবার আগের মত পুরো উদ্যমে কাজ করুন।আর,মিস্‌ হার্ট,আপনাকে ওয়ারনিং দেওয়া থাকলো।ভবিষ্যতে এরকম কাজ করলে শাস্তি আপনাকে পেতে হবে।এখন আপনারা নিজ নিজ কাজে যান।
  মিস্‌ হার্টঃএটা কী হল মিস্টার ব্রেইন?সবার সামনে আমাকে অপমান করার শাস্তি কি এরা পাবেনা?
  মিসেস আইঃআমি হার্ট আপার সাথে একমত।মেয়েরা সব জায়গায় বঞ্চিত।
  স্টোমাকঃমিস্টার ব্রেইন, মিস্‌ হার্ট এত বড় একটা অপরাধ করেও ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন?বিচারটা কি এক পেশে হয়ে গেল না?
শুরু হল তুমুল ঝগড়াসভা অমিমাংসিতভাবে শেষ হল। এটা কল্পনা।এই প্রতিষ্ঠানটি হল আমাদের শরীর।সবাই নিজের কাজগুলো না করে অন্যের উপর দোষ চাপালে অসুস্থ হয়ে পড়ব আম্রা।সুপ্রিয় পাঠক,এবার আপনি আমাদের দেশটাকে নিজের শরীর কল্পনা করে গল্পের শুরু থেকে মিলিয়ে দেখুন্‌তো একবার।আমাদের বাস্তবতার সাথে এটার কি তফাত খুব বেশী?আশা করি বিজ্ঞ পাঠককে ভেঙ্গে বলতে হবেনা আমি কি বুঝাতে চাচ্ছি।

No comments:

Post a Comment